ডেস্ক রিপোর্ট –
সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, লালাখাল ও রাতারগুলের মতো আরেকটি অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট কানাইঘাট উপজেলার মূলাগুলের লোভাছড়া। চারদিক নদী-নালা, খালবিল ও উচুঁ-নীচু টিলাবেষ্টিত এ জনপদটি যেনো একটি দ্বীপ। পাথর কোয়ারী ও বালুমহাল সমৃদ্ধ কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী এ জনপদটির উত্তর-পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লোভানদী ও দক্ষিণ-পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুরমা নদী। এছাড়াও দেছই, কালিজুড়ি ও নুন নদীসহ অসংখ্য ছোট ছোট নদী-নালা এ অঞ্চলের বুক চিরে বয়ে গেছে। লোভা নদীর উপর কোন ব্রীজ না থাকায় উপজেলা সদরের সাথে সরাসরি কোন ধরণের সড়ক যোগাযোগ নেই। নদীপথে কাঠের নৌকায় করে যেতে হয় লোভাছড়ায়।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কোল ঘেঁষে বাংলাদেশের সীমানার ভিতরে সবুজে মোড়া উঁচু টিলার একপাশে পাহাড়, অন্যপাশে স্বচ্ছ জলের নদী। উঁচু-নীচু টিলার উপর দাঁড়ালেই হাতছানী দেয় মেঘ-পাহাড়। এমনি একটি স্থান হলো- অপার সম্ভাবনাময়ী পর্যটন স্পট লোভাছড়া । প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য পর্যটকরা ছুটে আসেন লোভাছড়ায়। এখানকার ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত ঝুলন্ত ব্রীজ,লোভাছড়া চা-বাগান, বাংলো ঘর ও ভারত থেকে নেমে আসা স্বচ্ছ জলরাশির লোভানদী হলো মূল আর্কষণ।
প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর মূলাগুলে রয়েছে পাথর কোয়ারী, বালুমহাল, জলমহাল, প্রায় তিনশত বছরের পুরনো জনবসতি,গারো উপজাতিদের টিলা, ছোট-বড় পাহাড়, উঁচু-নিচু টিলা, পাহাড়ী ঝর্ণা, ঝর্ণার উপর ঝুলন্ত সেতু, চা-বাগান, দু’পাহাড়ের মাঝে আঁকাবাঁকা নুড়ি পাথরের রাস্তা, প্রায় দু’শ বছরের পুরনো বটবৃক্ষ, সামাজিক বনায়নের সাঁরি সাঁরি গাছ ও পাহাড়ী ছোট ছোট নদীগুলো এ এলাকাকে পর্যটন শিল্পের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে কারণেই পর্যটকরা এখানে ছুটে আসেন। পর্যটকদের কাছে লোভাছড়া প্রকৃতির রূপ কন্যা বলে পরিচিত।
উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় পর্যটক ও এখানকার অধিবাসীরা শুকনো মৌসুমে পায়ে হেঁটে ও বর্ষায় নৌকায় চলাচল করেন বলে জানা যায়। মূলাগুল অঞ্চলের মূল পর্যটন স্পট কানাইঘাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বর্ষায় নৌকায় আর শুকনো মৌসুমে পাঁয়ে হেঁটে ও মোটরসাইকেলে যাতায়াত করতে হয়। মূল স্পটে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা। সড়কপথে যানবাহন নিয়ে সরাসরি স্পটে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এসব প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেও প্রকৃতিপ্রেমী, ভ্রমণ পিপাসু লোকজন প্রকৃতির একটু অনাবিল আনন্দ ও সুখ পেতে ছুটে আসে মূলাগুল পর্যটন এলাকায়। কিন্তু সেখানে সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় সরকারী বা বেসরকারী উদ্যোগে আজও গড়ে উঠেনি কোনো হোটেল, মোটেল কিংবা কটেজ।